১২:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাঙ্গলকোটে করোনাকালীন হিরো

সহযোগিতা ছাড়া কিছুই চাইনি!
২০২০ সালের ঠিক এই তারিখ রাতের কাজ। রাত তখন ২টা। সাথে কোনো স্থানীয় সহযোগী ছিলো না। দূর থেকে পানি গরম করতে চুল্লী দেখিয়ে দেয়। পরে আমরা পানিও গরম করি। ভয়ে ইমাম সাহেবও আসেনি। আমি জানাজা পড়াই। নাঙ্গলকোটের সেই প্রচণ্ড ভয়াবহ অবস্থার সাক্ষী আমরা। সে সময় আমাদেরকে গাড়িও নিতো না। আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের নিজেদের অটো থাকায়, ছোটভাইদের নিয়ে কাজে যেতাম।
তখন অনেক মানুষই আমাদের বলতো; ‘আরে সমস্যা নেই, তোমরা তো মোটা দাগে টাকা পাবা। টাকা ছাড়াতো এসব কাজ হয় না। সরকার ভাসিয়ে দিবে”। এসব শুনে অনেক কষ্ট লাগতো। মানুষ বুঝতো না কেন? যে, মানুষ টাকার জন্য কী জীবন বাজি রেখে কাজ করে?
কিন্তু আমাদের কোনো সদস্যদের মনে কিছু পাওয়ার আশা ছিলো না, পায়ও নি। সবচেয়ে আফসোসের বিষয় হলো, আমাদের ট্রিটমেন্ট সহ যাবতীয় সহযোগিতা করার কথা ছিলো নাঙ্গলকোট সরকারি হাসপাতালের। কিন্তু তাদের থেকে আমরা ভালো ব্যবহার টুকুনও পাইনি। কোনো সদস্যের চিকিৎসা পাইনি। তাদের কাজ আমরা আঞ্জাম দিতাম, কিন্তু তাদের কাছে পরিচয় দিলে মনে হয় আমাদের চিনেই না! আমরা ভিন দেশ থেকে আসা। বড় সাহেবকে কল দিলে কল ধরতো না। তবে হ্যাঁ এক্ষেত্রে তৎকালীন নির্বাহী অফিসার Lamia Saiful ম্যাম মোটামুটি সহযোগিতা করেছেন।
এখন আসি আসর কথায়;
নাঙ্গলকোটে ৩৬ টা, লাকসাম ও নাটেরপেটুয়া মিলে ৪১টা লাশ কাফন দাফন করেছি। বেশিরভাগই ছিলো গভীর রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারে। যেনো এলাকার মানুষ টের না পায়। মোটামুটি সবগুলো ডকুমেন্টস ও ফটো আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। কিন্তু আমি তা দিয়ে কখনো #ফটো_বানিজ্য করিনি। লাশ কাফন দাফন, অক্সিজেন সেবা, খাদ্য সহায়তাসহ কাজের বহুদিন পরেও, এসব আপলোড দিয়ে কারো মায়া কামাতে চাইনি। ফটো বানিজ্য করবার চেষ্টা আমি বা আমাদের কোনো সদস্যও করেনি। তবুও আমাদের সাথে কোনো “লোগো” না থাকার কারণে আমরা কোনো সহযোগিতা পাইনা, বারবার বাধাপ্রাপ্ত হই।
এখনো এ ফটোটা দিতাম না। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ থেকে ৩বছর পর সামনে আসায় দিলাম আরকি। সরকারি বেসরকারি সবমহলের কাছেই আমার অনুরোধ হলো, আমরা এসব নিয়ে আপনাদের কাছে পরিচয় দিতে যাই না। আপনাদের কাছে কোনো বিনিময় কখনো চাইনি ও চাইনা। শুধু একটিই চাওয়া, তা হলো; তাকওয়া ফাউন্ডেশন নাঙ্গলকোটBenefits for Ummah এর পক্ষ থেকে আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করছি ও করার ইচ্ছে আছে। দয়া করে আমাদেরকে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ দিন, পারলে একটু সহযোগিতা করবেন। অযথা বারবার আমাদের ভীন দলের ট্যাগ না দিয়ে, সরাসরি বলুন। আমরা কাজ বন্ধ করে দিবো।
আমরা কোনো দপ্তরে কিছু পেতে লবিং কখনো করিনি। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও করবো না। জাস্ট একটু সহযোগিতা চাই।
লেখকের পরিচিতি

জনপ্রিয় সংবাদ

নড়াইলের লোহাগড়ায় মদ্যপানে মৃত্যু ১ অসুস্থ ১

নাঙ্গলকোটে করোনাকালীন হিরো

আপডেট সময় : ১২:৩২:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩
সহযোগিতা ছাড়া কিছুই চাইনি!
২০২০ সালের ঠিক এই তারিখ রাতের কাজ। রাত তখন ২টা। সাথে কোনো স্থানীয় সহযোগী ছিলো না। দূর থেকে পানি গরম করতে চুল্লী দেখিয়ে দেয়। পরে আমরা পানিও গরম করি। ভয়ে ইমাম সাহেবও আসেনি। আমি জানাজা পড়াই। নাঙ্গলকোটের সেই প্রচণ্ড ভয়াবহ অবস্থার সাক্ষী আমরা। সে সময় আমাদেরকে গাড়িও নিতো না। আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের নিজেদের অটো থাকায়, ছোটভাইদের নিয়ে কাজে যেতাম।
তখন অনেক মানুষই আমাদের বলতো; ‘আরে সমস্যা নেই, তোমরা তো মোটা দাগে টাকা পাবা। টাকা ছাড়াতো এসব কাজ হয় না। সরকার ভাসিয়ে দিবে”। এসব শুনে অনেক কষ্ট লাগতো। মানুষ বুঝতো না কেন? যে, মানুষ টাকার জন্য কী জীবন বাজি রেখে কাজ করে?
কিন্তু আমাদের কোনো সদস্যদের মনে কিছু পাওয়ার আশা ছিলো না, পায়ও নি। সবচেয়ে আফসোসের বিষয় হলো, আমাদের ট্রিটমেন্ট সহ যাবতীয় সহযোগিতা করার কথা ছিলো নাঙ্গলকোট সরকারি হাসপাতালের। কিন্তু তাদের থেকে আমরা ভালো ব্যবহার টুকুনও পাইনি। কোনো সদস্যের চিকিৎসা পাইনি। তাদের কাজ আমরা আঞ্জাম দিতাম, কিন্তু তাদের কাছে পরিচয় দিলে মনে হয় আমাদের চিনেই না! আমরা ভিন দেশ থেকে আসা। বড় সাহেবকে কল দিলে কল ধরতো না। তবে হ্যাঁ এক্ষেত্রে তৎকালীন নির্বাহী অফিসার Lamia Saiful ম্যাম মোটামুটি সহযোগিতা করেছেন।
এখন আসি আসর কথায়;
নাঙ্গলকোটে ৩৬ টা, লাকসাম ও নাটেরপেটুয়া মিলে ৪১টা লাশ কাফন দাফন করেছি। বেশিরভাগই ছিলো গভীর রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারে। যেনো এলাকার মানুষ টের না পায়। মোটামুটি সবগুলো ডকুমেন্টস ও ফটো আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। কিন্তু আমি তা দিয়ে কখনো #ফটো_বানিজ্য করিনি। লাশ কাফন দাফন, অক্সিজেন সেবা, খাদ্য সহায়তাসহ কাজের বহুদিন পরেও, এসব আপলোড দিয়ে কারো মায়া কামাতে চাইনি। ফটো বানিজ্য করবার চেষ্টা আমি বা আমাদের কোনো সদস্যও করেনি। তবুও আমাদের সাথে কোনো “লোগো” না থাকার কারণে আমরা কোনো সহযোগিতা পাইনা, বারবার বাধাপ্রাপ্ত হই।
এখনো এ ফটোটা দিতাম না। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ থেকে ৩বছর পর সামনে আসায় দিলাম আরকি। সরকারি বেসরকারি সবমহলের কাছেই আমার অনুরোধ হলো, আমরা এসব নিয়ে আপনাদের কাছে পরিচয় দিতে যাই না। আপনাদের কাছে কোনো বিনিময় কখনো চাইনি ও চাইনা। শুধু একটিই চাওয়া, তা হলো; তাকওয়া ফাউন্ডেশন নাঙ্গলকোটBenefits for Ummah এর পক্ষ থেকে আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করছি ও করার ইচ্ছে আছে। দয়া করে আমাদেরকে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ দিন, পারলে একটু সহযোগিতা করবেন। অযথা বারবার আমাদের ভীন দলের ট্যাগ না দিয়ে, সরাসরি বলুন। আমরা কাজ বন্ধ করে দিবো।
আমরা কোনো দপ্তরে কিছু পেতে লবিং কখনো করিনি। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও করবো না। জাস্ট একটু সহযোগিতা চাই।