
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ। গত সোমবার রাতে পুরনো কমিটির উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন কালু ও সাধারণ সম্পাদক আবু ইউছুফ ভূঁইয়ার সমর্থকরা নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। অন্যদিকে গতকাল মঙ্গলবার নবগঠিত কমিটি পরিচিতি সভা করেছে নাঙ্গলকোট মডেল মহিলা কলেজ মাঠে।
জানা যায়, ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর আরিফুর রহমান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন কমিটি ঘোষণা না দিয়ে ১৭ ডিসেম্বর সামছুদ্দিন কালুকে সভাপতি ও আবু ইউছুফ ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ।
আবার আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অমান্য করে এর তিন মাসের মাথায় কোনো কারণ ছাড়াই আগের কমিটি বিলুপ্ত না করে গত ২৬ মার্চ অধ্যক্ষ আবু ইউছুফকে সভাপতি ও আবু বক্কর সিদ্দিক আবুকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্য কমিটির অনুমোদন দেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। এ কমিটির জের ধরে উত্তপ্ত নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
গত শনিবার ঈদের দিন রাতে পুরনো কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন কালু ও ভাইস চেয়ারম্যান আবু ইউছুফ ভূঁইয়া চেয়ারম্যান বাড়ির মাঠে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে তার সমর্থকরা গত সোমবার রাতে নবাগত কমিটি বাতিলের দাবিতে পৌর সদর বাজারের বিভিন্ন সড়কে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন। ফলে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে।
এর আগে গত রবিবার রাতে নবগঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু ইউছুফ নিজ বাড়িতে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে তিনি গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ হলরুমে পরিচিতি সভার স্থান নির্ধারণ করে চিঠি ইস্যু করেন। পরে নাঙ্গলকোট আফসারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সকালে নাঙ্গলকোট মডেল মহিলা কলেজ মাঠে প্রথম পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন। কালু ভাই আমাদের নেতা। অধ্যক্ষ আবু ইউছুফ ভাই আমাদের নেতা। আমরা কোন দিকে যাব। এ গ্রুপিং সামাধা না করলে জাতীয় নির্বানে দল কে জয়ী করতে কঠিন হবে।’ এ বিষয়ে সদ্য বিদায়ী সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন কালু বলেন, আমি তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে আসছি। আমার হাজার হাজার কর্মী সমর্থক আছে। আমাকে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই আরেকটি কমিটি দেয়। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে নবগঠিত অওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ আবু ইউছুফ বলেন, রাজনীতির শেষ নেই। এখানে কোনো গ্রুপিং নেই। উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুউদ্দিন কালু ও ভাইস চেয়ারম্যান আবু ইউছুফ ভূঁইয়া মিলে ১০১ জন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি আনে। যা গঠনতন্ত্র বহির্ভূত। সে জন্য মন্ত্রী মহোদয় আমাদের ৭১ জন বিশিষ্ট কমিটি দিয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, তিন মাসের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি কমিটি বাতিল করা এটা দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থী, নজিরবিহীন এটা।