০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রামে ৪৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী

ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি, অতিবর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ৪৫ হাজার ২০০ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দুই উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বীজতলা, ধানিজমি, মাছের ঘের, রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর তলিয়ে গেছে।

জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা সূত্র জানায়, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী। ওই উপজেলার ৪০৩টি বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ৩ হাজার মত্স্য খামার, ১৯৮ হেক্টর বীজতলা, ২৭ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার ৬৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৫ হাজার ১৪২টি পরিবার নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে নাঙ্গলকোট উপজেলার ২০ হাজার ২০০ মানুষ পানিবন্দী। ওই উপজেলার ৫৯৫টি বাড়িঘর বিধ্বস্ত। ৮৯ দশমিক শূন্য ৭ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানকার ৬ দশমিক ৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৩ হাজার ১৩৫টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বুধবার দুর্গত এলাকার মধ্যে চৌদ্দগ্রামে ৩০ মেট্রিক টন ও নাঙ্গলকোটে ২৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার আরও ২০০ মেট্রিক টন জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়ার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছেন কুমিল্লার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে নাঙ্গলকোট উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া, তপোবন, বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের অষ্টগ্রাম, বাঙ্গগড্ডা ইউনিয়নের শ্যামপুর, পরিকোট গ্রাম, রায়কোট, মোকরা ও ঢালুয়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকে গেছে। রাস্তাঘাট ডুবে আছে পানিতে। শ্যামপুর গ্রামেই অন্তত ১০০টি পরিবার পানিবন্দী।
বাঙ্গগড্ডা এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, বাড়িঘরে ডাকাতিয়া নদীর পানি ঢুকে গেছে। গত কয়েক দিনেও ওই পানি নামছে না। ডাকাতিয়া নদীর গতিপথ বিভিন্ন স্থানে বেড়া ও জাল দিয়ে রুদ্ধ করা হয়েছে। এতে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

সাতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল বারী চৌধুরী বলেন, ‘বন্যায় আমাদের গ্রামের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বাজারেও পানি ঢুকেছে। মাছের খামার ভেসে গেছে।’
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষকে সাহায্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো হয়েছে।
কুমিল্লার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, দুই উপজেলায় পানি বাড়ার কারণে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে। প্রশাসন দুর্গত মানুষদের সহায়তার জন্য এরই মধ্যে ৫৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। আরও ত্রাণ দেওয়ার জন্য প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

লেখকের পরিচিতি

নাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রামে ৪৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী

আপডেট সময় : ১০:৩০:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০১৭

ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি, অতিবর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ৪৫ হাজার ২০০ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দুই উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বীজতলা, ধানিজমি, মাছের ঘের, রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর তলিয়ে গেছে।

জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা সূত্র জানায়, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী। ওই উপজেলার ৪০৩টি বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ৩ হাজার মত্স্য খামার, ১৯৮ হেক্টর বীজতলা, ২৭ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার ৬৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৫ হাজার ১৪২টি পরিবার নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে নাঙ্গলকোট উপজেলার ২০ হাজার ২০০ মানুষ পানিবন্দী। ওই উপজেলার ৫৯৫টি বাড়িঘর বিধ্বস্ত। ৮৯ দশমিক শূন্য ৭ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানকার ৬ দশমিক ৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৩ হাজার ১৩৫টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বুধবার দুর্গত এলাকার মধ্যে চৌদ্দগ্রামে ৩০ মেট্রিক টন ও নাঙ্গলকোটে ২৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার আরও ২০০ মেট্রিক টন জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়ার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছেন কুমিল্লার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে নাঙ্গলকোট উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া, তপোবন, বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের অষ্টগ্রাম, বাঙ্গগড্ডা ইউনিয়নের শ্যামপুর, পরিকোট গ্রাম, রায়কোট, মোকরা ও ঢালুয়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকে গেছে। রাস্তাঘাট ডুবে আছে পানিতে। শ্যামপুর গ্রামেই অন্তত ১০০টি পরিবার পানিবন্দী।
বাঙ্গগড্ডা এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, বাড়িঘরে ডাকাতিয়া নদীর পানি ঢুকে গেছে। গত কয়েক দিনেও ওই পানি নামছে না। ডাকাতিয়া নদীর গতিপথ বিভিন্ন স্থানে বেড়া ও জাল দিয়ে রুদ্ধ করা হয়েছে। এতে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

সাতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল বারী চৌধুরী বলেন, ‘বন্যায় আমাদের গ্রামের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বাজারেও পানি ঢুকেছে। মাছের খামার ভেসে গেছে।’
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষকে সাহায্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো হয়েছে।
কুমিল্লার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, দুই উপজেলায় পানি বাড়ার কারণে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে। প্রশাসন দুর্গত মানুষদের সহায়তার জন্য এরই মধ্যে ৫৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। আরও ত্রাণ দেওয়ার জন্য প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।