
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছে ওই গৃহবধূ। পার্শ্ববর্তী বাড়ির সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিশোধ নিতে প্রতিপক্ষ এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২ টার পর উপজেলার দৌলখাঁড় ইউনিয়ন কান্দাল গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী। গৃহবধূর স্বামী রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গাড়ি চালকের চাকুরী করেন। ঘটনার দিন তার বাড়িতে অসুস্থ শাশুড়ি এবং দুই বছরে শিশুকন্যা ছাড়া আর কেউ ছিলনা।
অভিযুক্তরা গৃহবধূকে ধর্ষণের পর তার ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারও লুট করে নিয়ে যায় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। গৃহবধুকে ধর্ষণের ঘটনায় দুইজনের নাম উল্লেখ এবং অপর একজনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাঙ্গলকোট থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একে ফজলুল হক। একে ফজলুল হক জানান, শুক্রবারেই মামলাটি দায়ের হয়। অভিযুক্ত ইমাম হোসেনকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং ভুক্তভোগীকে মেডিকেল টেস্টের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ইমাম হোসেন ছাড়াও এই মামলায় জাহিদুল্লাহ ও অজ্ঞাত আরো জনকে আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ মামলায় উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত ইমাম হোসেনের পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন যাবত জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এর আগেও অভিযুক্ত ইমাম হোসেন ওই গৃহবধূকে ধর্ষণের হুমকি দেয়। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে আনুমানিক বারোটা দশ মিনিটের সময় ইমাম হোসেন সহ আরো দুইজন বাড়ির দরজা ভেঙে ঐ গৃহবধুর ঘরে প্রবেশ করে। পরে তার হাত-পা ও মুখ বেঁধে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের পর যতদূর চুল কেটে ফেলে অভিযুক্তরা।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা ঐ গৃহবধূর ঘর থেকে দেড় লক্ষাধিক নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার এবং জরুরী দলিলাদি লুট করে নিয়ে যায়। লুটতরাজের সময় পাশের ঘরে থাকা ওই গৃহবধূ শাশুড়ি টের পেলে, তার চিৎকার চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগীর স্বামী জানান, পাশের বাড়ির ইমাম হোসেনের সাথে আমাদের দীর্ঘ তিনি জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। ইমাম হোসেন দীর্ঘদিন যাবত আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হুমকি ধমকি ও মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছিল। চাকরির সুবাদে বৃহস্পতিবার ঘটনার দিন আমি বাড়িতে ছিলাম না, ঐদিনও ওই পরিবারের সাথে আমার স্ত্রীর কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই রাতে এই ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের পর আমার স্ত্রীর চুল কেটে দিয়ে গেছে ওরা। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-আমিন সরকার জানান, ঘটনাটির বিষয়ে আমি অবগত আছি। প্রাথমিক তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ শেষে এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে থানায়। আমার ওসির সাথে ঘটনাটি নিয়ে কথা হয়েছে। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর বিধায় পুলিশ মামলাটি গুরুত্বের সাথে দেখছে।